Ads for search

Ads

শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট পার্টির বাংলাদেশে কোনো স্থান নেই: ড. ইউনূস

ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচারী শাসক শেখ হাসিনার রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ 'ফ্যাসিবাদের সব বৈশিষ্ট্য' প্রদর্শন করছে বলে অভিযোগ করেন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, দেশের রাজনীতিতে এখন এই দলের কোনো স্থান নেই।
যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী গণমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এসব মন্তব্য করেন। সাক্ষাৎকারটি আজ বুধবার পত্রিকাটির অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত হয়। পত্রিকাটি বলেছে, এই ভাষণের মাধ্যমে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী এই অধ্যাপক বাংলাদেশের প্রাচীনতম ও বৃহত্তম রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার পক্ষে অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। দলের প্রধান এবং টানা ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা শেখ হাসিনা গত ৫ আগস্ট ছাত্র বিদ্রোহের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হন। মুহাম্মদ ইউনূস সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তার অন্তর্বর্তী সরকার ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ চাইবে না। সংবাদপত্রের মতে, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রতিবেশী (ভারত) সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক উত্তেজনা উস্কে দেওয়ার মুহূর্ত এড়াতে এই পন্থা নেওয়া হতে পারে। অধ্যাপক ইউনূস বলেন, "তার (শেখ হাসিনা) অবশ্যই কোনো স্থান নেই - আওয়ামী লীগের কোনো স্থান নেই - বাংলাদেশে, এমনকি স্বল্প মেয়াদেও।" "তারা তাদের স্বার্থ বাড়াতে জনগণকে নিয়ন্ত্রণ করেছে, তারা রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করেছে, তারা প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করেছে," বলেছেন ড. ইউনুস। তিনি আরও বলেন, "গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় কোনো ফ্যাসিবাদী দলের অস্তিত্ব থাকা উচিত নয়।" রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বী ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে কুক্ষিগত করার, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড পরিচালনা এবং শেখ হাসিনার দীর্ঘ শাসনামলে সাম্প্রতিক নির্বাচনে ভোট জালিয়াতির আশ্রয় নেওয়ার অভিযোগ তুলেছে। শেখ হাসিনা পালানোর পর তার দলকে সাময়িকভাবে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে দূরে রাখা, সংস্কার করা, নাকি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা উচিত তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। ইউনূসের মতে, আওয়ামী লীগ দুর্বল ও ব্যর্থ দলে পরিণত হতে পারে। তবে তিনি জোর দিয়েছিলেন যে তার অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসন দলের ভাগ্য নির্ধারণ করবে না। কারণ, এটা 'রাজনৈতিক সরকার' নয়। আওয়ামী লীগ ভবিষ্যত নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে কি না, রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত হবে উল্লেখ করে মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, 'তাদের (রাজনৈতিক দলগুলোকে) সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। রাজনীতি করো।' ভারতে হাসিনা কোথায় আছেন তা স্পষ্ট নয়। সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে বলেন, তার দল যেকোনো সময় নির্বাচনে অংশ নিতে প্রস্তুত। অর্থনীতির প্রাক্তন অধ্যাপক এবং 'গরিবের ব্যাংকার'। ইউনূস 2006 সালে নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হন। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার আগে শেখ হাসিনা এই প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদকে টার্গেট করেছিলেন। তার (হাসিনার) সমালোচকরা একে প্রতিশোধের ঘটনা বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার বা রাজনৈতিক দল করার কোনো ইচ্ছা তার নেই। ইউনুস। বলেছেন, নির্বাচনের তফসিল (এখন) টানা হবে না। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'আমাদের কাজ (বিভিন্ন সমস্যা) সমাধান করা এবং নতুন সংস্কার এজেন্ডা বাস্তবায়ন করা। নির্বাচনের প্রস্তুতি শেষ হলে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করব। শেখ হাসিনার পতনের ফলে তার সরকারের সবচেয়ে বড় বিদেশী সমর্থক ভারতের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে। অধ্যাপক ইউনূস বলেন, তার সরকার শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ চাইবে। তবে দেশের অভ্যন্তরীণ অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল) রায়ের পরই তা চাওয়া হবে। শেখ হাসিনাসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে ট্রাইব্যুনাল। "তিনি (শেখ হাসিনা) মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন... রায় পেলে আমরা ভারতের সঙ্গে প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করব। আমার মনে হয় না এর আগে আমাদের কিছু করার আছে। রায় পান,' বলেন ড. ইউনুস।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.